" নবজাতকের পোশাক "

" নবজাতকের পোশাক "

একটি শিশু তার জীবনের প্রথম কয়েক মাস দিনের ৮০% সময় ঘুমিয়েই কাটায়। এই ঘুমের সময়েই শিশুর ওজন এবং আকার বাড়ে দ্রুত গতিতে। অধিকাংশ বাবা মা শিশুর এই লাগাতার ঘুম নিয়ে দু:চিন্তা করলে ও এটি একটি বড় আশিবার্দ। তাই ঘুমের ব্যাঘাত ঘটানো যাবেনা এবং ভাবতে হবে কিভাবে ঘুমটি হয় আরো আরামদায়ক। আজকে আমরা জানাবো কেমন পোশাক নবজাতকের ঘুমের জন্য সবচেয়ে আরামের হবে।

মায়েদের কাছে তার নবজাতক শিশু পুতুলের মতো। তাদের যেমন খুশি তেমনিভাবে বিভিন্ন ধরনের পোশাক পরানো যায়। কিন্তু শিশুরা ছোট হলেও তাদেরও আছে ছোট্ট একটি মন । তাদেরও নিজস্ব সুবিধা, অসুবিধা, স্বাচ্ছন্দ্যবোধ রয়েছে। শিশুটির পোশাকের বস্ত্র রঙ ডিজাইন জমিন নির্বাচনের কাজটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং কঠিন। শিশুর পোশাক নির্বাচন করার সময় শিশুর মনোবিকাশ, শারীরিক গঠন, দেহ চর্মের বৈশিষ্ট্য প্রত‍্যেকটি বিষয়ের দিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে। শিশুর পোশাক পরিধানের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দৈহিক উত্তাপের সাথে সমতা রক্ষা করা। দেহের বাইরের আবরণকে রক্ষা করা। দেহকে বিভিন্ন পোকা মাকড়ের হাত থেকে রক্ষা করা। এছাড়া শিশুরা খুব তাড়াতাড়ি রোগ জীবাণুর দ্বারা আক্রান্ত হয়। এই রোগ জীবাণুর হাত থেকে রক্ষা করার ক্ষেত্রেও পোশাকের গুরুত্ব অপরিসীম। শিশুদের পোশাক ঢিলেঢালা, ঝকঝকে, উজ্জ্বল রঙের হওয়া উচিত। প্রতিটি শিশুর সৌন্দর্য প্রীতি তার পোশাক ও পরিচ্ছদকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠে।

একটি শিশুর জন্মের পর থেকে দুই সপ্তাহ বা ১৪ দিন পর্যন্ত সময় কালকে নবজাতক হিসেবে ধরা হয়। এই সময় শিশুদের ত্বক অনেক বেশি কোমল ও সংবেদনশীল হয়ে থাকে। নবজাতকের পোশাকে অবশ্যই সুস্থতা, আরামদায়কতা এবং স্বাস্থ্য সম্মত এই তিনটি বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে।

 

আবহাওয়া উপযোগী:

নবজাতকদের পোশাকের পরিমাণ ও প্রকার নির্ভর করে বছরের কোন ঋতুতে তার জন্ম, সেই স্থানের আবহওয়া, কক্ষের উত্তাপ এবং শিশুর দৈহিক অবস্থার উপর। নবজাতক শিশুদের হালকা ওজন বিশিষ্ট কোমল ও নরম বস্ত্র অর্থাৎ আরামদায়ক বস্ত্র পোশাকের জন্য প্রথম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এদের পোশাক সুতির হওয়াই উত্তম।

বারবার ধোয়া যায় শিশুর পোশাকের বস্ত্র এমন হওয়া উচিত যা সহজে ধোয়া ও শুকানো যায়। কারণ নানা কারণে শিশুর পোশাক বার বার পাল্টাতে হয়। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পোশাক শিশুর জন্য একান্ত আবশ্যক। কেননা, প্রাপ্ত বয়স্কদের তুলনায় শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কম।

অবশ্যই সুতি:

শিশুর জন্য ঘাম ও তাপ শোষণ ক্ষমতা সম্পন্ন বস্ত্রই উত্তম। যেমন সুতি, তাঁতের কাপড়, ভয়েল ইত্যাদি জাতীয় কাপড়। এছাড়া এদের নিটেড ফ্রেব্রিকও পরানো যায়।

 

তুলতুলে পশমী কি ভালো হবে:

অনেক শিশুর ত্বক সেনসেটিভ হয়। পশমে এলার্জি থাকতে পারে। অনেক সময় শিশুর ত্বকে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে পশমী কাপড়। তবে শীতে শিশুর জন্য পশমের বস্ত্র ব‍্যবহার করলেও তার নীচে নরম সুতির বস্ত্র পরাতে হবে।

ডিজাইন কেমন হবে:

এ বয়সের শিশুর পোশাকের নকশা হবে অত্যন্ত সাধারণ এবং সেলাই হবে খুবই কম। পোশাক হবে ঢিলেঢালাশ মানানসই যাতে অঙ্গ সঞ্চালনে কোন রকম অসুবিধা না হয়। পোশাকের সামনে বা পিছনে সম্পূর্ণ খোলা রাখতে হবে। যাতে মাথার উপর দিয়ে পরানোর বা খোলার প্রয়োজন না হয়। খোলা

দিক বন্ধ করার জন্য টিপ বোতাম বা ফিতা ব‍্যবহার করা উচিত। গলায় চতুর্দিক ঘুরিয়ে কোন ফিতা ব‍্যবহার করা যাবে না। ছোট শিশুদের দৈহিক বর্ধনের জন্য ঢিলেঢালা পোশাক বেশি প্রয়োজন। আঁটসাট এবং ইলাস্টিক দেয়া পোশাক যেমন আরামদায়ক হয় না তেমনি স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর।

নবজাতক শিশুর পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে অধিক সর্তকতা অবলম্বন করা উচিত। কারণ এই সময়কালে তারা নতুন তাপমাত্রার সাথে নিজেকে মানিয়ে নেবার চেষ্টা করে এবং তাদের ত্বকও অনেক বেশি কোমল থাকে। তাদের পরিধানে যেন সব সময় পরিষ্কার পোশাক থাকে সেদিকেও বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।