" শিশুর খেলনা সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নিন"

" শিশুর খেলনা সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নিন"

শিশুর পছন্দের তালিকায় প্রথমেই জায়গা করে নেয় খেলনা। খেলনার সাথেই কাটে শিশুর দিনের সবচেয়ে বেশি সময়। ‘শিশুর পছন্দ’ ও ‘বয়স উপযোগী খেলনা’ দুই বিষয়কে মাথায় রেখেই শিশুর জন্যে খেলনা নির্বাচন করতে হবে।

 

☆শিশুদের খেলনার ব্যাপারে কিছু সতর্কতা-

 জন্মের পর থেকে একটি শিশুর সবচেয়ে প্রিয় খেলার সাথী হচ্ছে তার খেলনা। এই খেলনার সাথে সে বেশ খানিকটা সময় কাটায়। তাই শিশুদের হাতে খেলনা তুলে দেওয়ার পূর্বে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন।

 ◆ সহজে পরিষ্কার করা যায় শিশুর জন্য এমন কোনো খেলনা নির্বাচন করুন -শিশুদের অভ্যাস যেকোনো কিছু হাতের কাছে পেলেই তা মুখে দেয়া। তাই শিশুরা যখন কোনো খেলনা মুখে দেয় তার সাথে বিভিন্ন রোগের জীবাণু শিশুর পেটে চলে যেতে পারে। যা হতে পারে শিশুর বিভিন্ন অসুস্থতার কারণ।

 ◆ শিশুর জন্য সঠিক আকারের খেলনা নির্বাচন -শিশুদের জন্যে খেলনার আকার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। খেলনার আকার হাতের তুলনায় ছোট হলে শিশুর মুখে ঢুকে যেতে পারে। যা বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।

 ◆ বয়সের অনুপযোগী খেলনা হতে শিশুকে বিরত রাখুন -শিশু বয়সের অনুপযোগী কিছু খেলনা, যেমন ক্যামেরা বা মোবাইল ছোটবেলায় হাতে পেলে তা ভবিষ্যতে শিশুর আচরণে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এর ফলে তারা বেশ খানিকটা অসল হয়ে পড়ে। এগুলো শিশুর স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর।

 ◆ কোনো ধারালো বস্তু বা খেলনা থেকে শিশুকে দূরে রাখুন -হাতের কাছে পাওয়া ধারালো খেলনা বা বস্তুর সাহায্যে না বুঝেই শিশু নিজেকে আহত করতে পারে। তাই, শিশুর কাছ থেকে শুধু ধারালো খেলনাই না যেকোনো রকম ধারালো জিনিস দূরে সরিয়ে রাখতে হবে। সেটি যেন ম কোনোভাবেই শিশুর হাতের নাগালে না আসে সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।

 ◆ বয়স অনুযায়ী খেলনা নির্বাচন -শিশুদের হাতে বয়স উপযোগী খেলনা তুলে দেওয়া আবশ্যক। প্রতিটি খেলনার সাথে তার জন্যে উপযুক্ত বয়সসীমা দেওয়া থাকে। সেই বয়সসীমা অনুযায়ী শিশুকে খেলনা কিনে দিতে হবে।

 ◆ একটি খেলনার হরেক রকম ব্যবহার-শিশুর জন্যে গাদাখানেক খেলনা কিনে না দিয়ে বরং শিশুকে একটি খেলনার মাধ্যমেই কিভাবে বিভিন্ন উপায়ে খেলা যায় তা শেখান। এতে করে শিশু খেলনার প্রতি আসক্ত না হয়ে খেলার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠবে।

 ◆ খেলনা গুছিয়ে রাখার বাক্স ও লেভেল লাগিয়ে রাখা -খেলনা রাখার জন্যে বাক্স ব্যবহার করুন, বাক্সের গাঁয়ে খেলনার ছবি লাগিয়ে দিন। এতে বাচ্চারা সহজে খেলনা খুঁজে পেতে ও গুছিয়ে রাখতে শিখবে।

 ◆ খেলনার প্রতি যত্ন-শিশুকে খেলনার যত্ন নিতে শেখান। এতে করে শিশুর নিজের জীবনেও অন্যান্য ব্যাপারে নিজে নিজে যত্ন নেওয়ার মতো অভ্যাস গড়ে উঠবে।

 ◆ খেলনাটি কি কি উপকরণ দিয়ে তৈরি -খেলনা কেনার আগে তার উপকরণ ভালোভাবে দেখে নিতে হবে। খেলনায় যুক্ত থাকতে পারে বিভিন্ন ধাতব পদার্থ যা শিশুর পেটে প্রবেশ করলে পেটে ব্যথা, বমি ও অস্থির ভাব দেখা দিতে পারে। জাতীয় অধ্যাপক এম আর খান শিশুদের খেলনার বিষাক্ততার বিষয়ে বলেন, “লেড, ক্যাডমিয়াম, ব্রোমিন, ক্রোমিয়ামের মতো বিষাক্ত কেমিক্যাল শিশুদের জন্য অনেক ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে।"

 ◆ধাতব পদার্থ-ভবিষ্যতে শিশুর কিডনি ও লিভার নষ্টের কারণ হতে পারে খেলনায় যুক্ত থাকা ধাতব পদার্থ। যা শিশুর জন্য অত‍্যন্ত ক্ষতিকর।

 

☆খেলনা কেনার সময় নিম্নোক্ত জিনিসগুলোর দিকে বিশেষ খেয়াল রাখুন-

 

১. খেলনার ব‍্যাস ১.৭৫ ইঞ্চি ব্যাসের কম হলে সেই খেলনা কেনা থেকে বিরত থাকুন।

 ২. শিশুদের জন্য ব্যাটারিচালিত খেলনা না কেনাই ভালো।

 ৩. শিশুর খেলনা কেনার সময় লম্বা হ্যান্ডেলসহ খেলনাগুলো এড়িয়ে চলুন।

 ৪. একদম ছোট শিশুর জন্য ক্রিব টয়েজ ব্যবহার না করাই উত্তম।

 

আপনার ছোট্ট শিশুটি আপনার কাছে অনেক বেশি আদরের। আর শিশুর জীবনে খেলনা এক বিশেষ জায়গা জুড়ে থাকে। তাই এই বিষয়টিতে বিশেষ খেয়াল রাখা অতিব জরুরি।